সোয়েব সাঈদ, রামু:
রামুতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। গুরুতর আহত তারেকুল ইসলাম (২৫) নামের ওই যুবককে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রফিকুল ইসলাম রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মনিরঝিল গ্রামের আবদুল হাশেমের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ রাত দেড় টার দিকে তারেকুল ইসলামের বাড়ির উঠোনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত তারেকুল ইসলামের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ২৩ মার্চ রামু থানায় মামলা (নং ৪০) দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ওই এলাকার মৃত ফরুক আহমদের ছেলে আবদুল গফুর (৪৫) ও আবদুল গফুরের স্ত্রী অনুরা বেগম (৩২)।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমানা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। বৃহস্পতিবার রাতে আকস্মিক ঝড়ো হাওয়ায় বসত ভিটার সীমানার একটি শুকনা আম গাছের ঢাল ভেঙ্গে পড়ে। এতে তারেকুল ইসলামের বসত ভিটার ঘেরা-বেড়া ভেঙ্গে যায় এবং চলাচলের রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত করার উদ্দেশ্যে তারেকুল ইসলাম রাতেই ভেঙ্গে পড়া গাছের ঢালটি সরানোর কাজ শুরু করেন। এসময় শত্রুতাবশত আবদুল গফুর ও তার স্ত্রী অনুরা বেগমের নেতৃত্বে আরও ৫/৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে লম্বা দা, লোহার রড, লাঠি সোঁটা নিয়ে তারেকুল ইসলামের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা দা দিয়ে তারেকুল ইসলামের মুখমণ্ডলে কোপ দেয়। এতে তারেকুল ইসলামের মাথার হাড়, কানসহ একপাশের অংশ এবং হাতের একাংশ কেটে যায়। এসময় হত্যার উদ্দেশ্যে আবদুল গফুর, অনুরা বেগমসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তারেকুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে আরও একাধিক গুরুতর জখম করেন।
তারেকুল ইসলামের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, বর্বরোচিত এ হামলার পর প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে তারেকুল ইসলাম মাটিতে নিথর হয়ে পড়ে যান। পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন মৃতপ্রায় ও মুমূর্ষু অবস্থায় তারেকুল ইসলামকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করান। সেখানে অবস্থা গুরুতর ও আশংকাজনক হওয়ায় তারেকুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। বর্তমানে তারেকুল ইসলামের মাথায় অপারেশন করা হয়েছে। তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। ভাইয়ের চিকিৎসা কাজে ব্যস্ততার কারণে ঘটনার ২ দিন পর শনিবার, ২৩ মার্চ তিনি এ ঘটনায় রামু থানায় মামলা করেছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানিয়েছেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। একটি গাছের ঢাল কাটাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতাবশত তারেক নামের যুবককে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত এজাহার পেয়ে সেটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য অভিযুক্ত আবদুল গফুর ও তার স্ত্রী অনুরা বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। ফলে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ দিকে যুবক তারেকুল ইসলামের উপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পুরো এলাকায় জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।